নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান,বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান বালীর পরিবারে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তারই ঔরসজাত দুই সন্তান দুলাল বালী ও জিয়াউর রহমান বালীর কৃতকর্মে এলাকায় তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। খোজ নিয়ে জানা যায় একই পরিবারের সন্তান হলেও তারা দুজন সৎ ভাই। ব্যক্তি জীবনে হাসান বালী তারই উপার্জিত অর্থ দিয়ে বানারীপাড়া পৌরসভা এলাকায় এক সময় ১১ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, ক্রয় সূত্রে যার মালিকানা হয় আবুল হাসান বালী নিজের নামে ৬ শতাংশ এবং প্রথম ও দ্বিতীয় সংসারের সন্তান পাঁচ ছেলের নামে ৫ শতাংশ, ঠিক সেই সময় দ্বিতীয় সংসারের ছোট ছেলে বর্তমান সময়ের জিয়াউর রহমান বালী,তার জন্ম ও হয়নি, যার ফলে বানারীপাড়া পৌরসভায় বালী পরিবারের যে ১১ শতাংশ জমি রয়েছে তার থেকে কোনো অংশই জিয়াউর রহমান বালীর নামে ছিলোনা। আরো খোঁজ নিয়ে জানা যায় আবুল হাসান বালীর দ্বিতীয় সংসারের ছোট ছেলে জিয়াউর রহমান বালী বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত আছেন, তিনি বাংলাদেশ পুলিশের এস আই পদ-মর্যাদায় বাগেরহাট থানায় কর্মরত আছেন। অপরদিকে আলুল হাসান বালীর সংসার জীবনের প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী কেউই বেচে নেই, বর্তমান সময় তিনি যথেষ্ট বয়স জ্যেষ্ঠ, যার ফলে তার সমস্ত দেখা শোনার দায়িত্ব এবং ভরণপোষণ, থাকা খাওয়া সবকিছুই ছোট ছেলে জিয়াউর রহমান বালীর সাথে, অবশ্য তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান নিয়মিত, তারপরেও ৮ হাজার টাকা বেতন দিয়ে বাবার দেখাশোনার জন্য কর্মচারী রেখেছেন জিয়াউর রহমান বালী। হাসান বালীর পরিবারে দুই সংসারে মোট ৬ জন ছেলে সন্তান রয়েছে, শুধুমাত্র ছোট সংসারের ছোট ছেলে জিয়াউর রহমান বালী ছাড়া অন্য ৫ ভাইয়েরই ব্যক্তি জীবনে কৃতকর্মের রেকর্ড তেমন একটা সুবিধা জনক নয়, এর ভিতর সর্বোচ্চ খারাপ রেকর্ড খুজে পাওয়া যায় তার বড় ছেলে দুলাল বালীর। আবুল হাসান বালী শেষ বয়সে এসে তার ছোট ছেলের কৃতকর্মে খুশি হয়েই হয়তো, বানারীপাড়া পৌরসভা এলাকায় বালী পরিবারের যে ১১ শতাংশ জমি রয়েছে সেখান থেকে আবুল হাসান বালীর নিজ নামে থাকা ৬ শতাংশ জমি থেকে ৫ শতাংশ জমি দানপত্র দলিল করে দিয়েছেন ছোট ছেলে পুলিশের এস আই জিয়াউর রহমান বালীর নামে। আর সেখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত শুরু হয়েছে, বানারীপাড়া পৌরসভা এলাকায় সেই ১১ শতাংশ জমিতে হাসান বালীর প্রথম সাংসারের বড় ছেলে দুলাল বালী, তার প্রথম স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত, সেখান থেকে বর্তমানে ৫ শতাংশ জমি সৎ ভাই জিয়াউর রহমান বালীকে দখল বুঝিয়ে দিতে ঘোর আপত্তি দুলাল বালীর। তারই জের ধরে গত ২৮ মার্চ বিকালে দুলাল বালী ও তার ছেলে রাজীব বালীর সাথে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয় সৎ ভাই জিয়াউর রহমানের। এবং সেই সূত্র ধরেই নিজের সৎ ভাই দুলাল বালী ও ভাতিজা রাজিব বালীর নামে বানারীপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশের এস আই জিয়াউর রহমান বালী।
অভিযোগে জিয়াউর রহমান উল্লেখ করেন, বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠী ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান বালীর কুলাঙ্গার সন্তান দুলাল বালী ও দুলাল বালীর ছেলে রাজিব বালী গংদের সাথে জিয়াউর রহমানের জমি জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন যাবত। সেই সূত্র ধরে একের পর এক হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন সৎ ভাই জিয়াউর রহমানকে, যার ফলে জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার হুমকির মুখে আছেন।
বাদীর দাবী তার নিজ নামীয় রেকর্ডভুক্ত ৫ শতাংশ জমি বিবাদী গং জোরপূর্বক ভোগ দখল করে রেখেছেন। সেই বিরোধের জের ধরে গত ২৮ মার্চ বিকালে দুলাল বালী ও তার ছেলে রাজীব বালীর সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বিবাদীরা জিয়াউর রহমানকে ভয়ভীতি দেখায়।
এমন কি নানাবিধি ক্ষতি সাধন করাসহ খুন যখমের হুমকি দেয়। জীবন নিরাপত্ত্বার জন্য জিয়াউর রহমান সম্প্রতি বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় সাধারন ডায়েরী করেন জি ডি নং ১২২৬।
উল্লেখ্য কিছু দিন পূর্বে এই দুলাল বালী তার বাবাকেও খুন যখমের হুমকি দিলে বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান বালী বলেন আমাকে মাঝেমধ্যেই হুমকি দেয় আমার বড় ছেলে দুলাল বালী, বালিশ চাপা দিয়ে মারবে বলে অনেক কিছু বলে,রাতের বেলা মসজিদে নামাজ শেষ করে বাড়ি আসার সময় আমাকে রাস্তায় পেয়ে গলা চেপে ধরে বলে তোকে মেরে ফেলবো আমার কথা না শুনলে, তিনি আরও বলেন দুলা আমার ছেলে নয় ছেলে নামের কলঙ্ক, আমার ঘরে একটা কুলাঙ্গার পয়দা হয়েছে, সে আমাকে মারার জন্য একের পর এক কৌশল অবলম্বন করিতেছে। আমি এক পর্যায় দিশেহারা হয়ে বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় জীবনের নিরাপত্ত্বা চেয়ে সাধারন ডায়েরী করেছি যার জিডি নং ১২২৫।
অপরদিকে দুলাল বালীর ব্যক্তিজীবনের ইতিহাস অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য-
এক সময় সর্বহারা পার্টির অন্যতম সদস্য ছিলেন এই দুলাল বালী, এনকাউন্টারে নিহত সর্বহারাপার্টির অন্যতম নেতা রিপনের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করতো দুলাল বালী। মালিকান্দা গ্রামে সংখ্যালঘুদের কাছে এখনও আতঙ্কের অপর নাম দুলাল বালী,জীবন বৃত্তান্তে অপকর্মের শেষ নেই তার,বেপরোয়া জীবন যাপনেই মশগুল রয়েছেন সর্বদা, আউয়ার গ্রামে শেখ বাড়ির মসজিদের মাইক চুরি করে বিক্রি করে দিয়ে জনগণের তাতে ধরা পড়েন তিনি, যা উক্ত এলাকার ছোট বড় সবাই অবগত । পরবর্তীতে ইজ্জত বাচাতে টাকা দিয়ে আপশ মীমাংসা করেন । নিজের স্ত্রী থাকার পরেও দুলাল বালী নিজের সন্তানের বয়সী পার্শবর্তী ইন্দেহাওলা গ্রামের নিপা নামের একটি মেয়ের সাথে অশ্লীলতা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হাওয়ার কারণে তার বড় স্ত্রী জেসমিন বেগম নিরুপায় হয়ে তার লিঙ্গ কর্তন করেন, কারন এলাকায় একাধিক মেয়ের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক ছিলো । যার ফলে এলাকায় লিঙ্গ কাটা দুলাল বালী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে নিপা নামের সেই মেয়েকে বিয়ে করে পুত্র সন্তানের বাবা হলে সেই উপাধি থেকে মুক্তি মেলে তার। শুধু তাই নয় স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের সাথে খারাপ আচরণ করতেন,স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের ভয়ভীতি এবং লোভ লালসা দেখিয়ে এক পর্যায়ে তাদেরকে যৌন হয়রানি করতেন বলে এলাকাবাসীর হাতে একাধিক বার মার খেয়েছেন। তার আপন বোন, ফাতিমা বেগম ও দুলাভাই রহিম মাস্টারকে বিনাকারণেই মারধর করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রক্তের সাথে সে বেইমানি করা তার একটি নেশায় পরিনত হয়েছে ,নিজ ফুপাত ভাই শাহআলম বালীকেও মারধর করেছেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকায় শালিশি মাতবরী করে দুই পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়েও হয়রানি করতো সাধারণ মানুষদের। অপরদিকে রাজনীতি নিয়ে তার একটি মহড়া ব্যবসা চালু রয়েছে এলাকায়, শুধু তাই নয় তার একটি পেশা ছিল বিএনপি এবং জামাত শিবিরদের সথে উস্কানিমূলক কথাবার্তা সাথে জড়িত থাকা আওয়ামী লীগের বিপক্ষে। ব্যক্তি জীবনে একাধিক বার দল পরিবর্তন করেছেন তিনি, যখন যে দল ক্ষমতায় আসে ইনিয়ে বিনিয়ে সেই দলেই যোগদান করেন তিনি, ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিত্য নতুন অপরাধ অপকর্মে বিলিয়ে দেন নিজেকে। আউয়ার জামে মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে দুলাল বালীর বিরুদ্ধে,কমিটির লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায় মসজিদ কমিটি তাকে অনাস্থা দিয়েছেন ইতিপূর্বে ।শুধু তাই নয় দুলাল বালীর জন্মদাতা পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান বালীকে পূর্বে মারধর করার করণে এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সে একটা খারাপ প্রকৃতির লোক, কুলাঙ্গার,নিজের জন্মদাতা পিতাকে মারধর করেছে একাধিকবার,এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছে যার ফলে নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন হাসান বালী নিজেই। নিজের সৎ ভাই জিয়াউর রহমান বালীর সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য পায়তারা করে বেড়াচ্ছে বর্তমানে, জিয়াউর রহমান বালী কে মারধর করে তার বুকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করেছিলেন,সেই আঘাতে বুকে এখনো প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন ছোট ভাই জিয়াউর রহমান বালী।
এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান বালী দিশেহারা হয়ে বানারীপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন । অথচ সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উল্টো জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে নিজে বাদী কোর্টে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন দুলাল বালী। এছাড়াও ডাকাতি করার সময় ,বাইশারী জনতার হাতে আটক হয়েছিলো দুলাল বালী, পরবর্তীতে বানারীপাড়া থানায় মামলা হলে সেই মামলায় অনেক দিন জেল হাজতে ছিলেন বলেও জানিয়েছেন এলাকাবাসী।